ডাইনোসরদের বিলুপ্তির কারণ
ঘটনাটি
ছিল উনবিংশ শতাব্দীর শুরুর দিককার, যখন ডাইনোসরের প্রথম জীবাশ্ম মানুষের
হাতে আবষ্কৃত হয়।এরপর সারা পৃথিবীতে পর্বত বা শিলায় আটকা পড়ে থাকা
ডাইনোসরের কঙ্কাল ক্রমান্বয়ে আবিষ্কৃত হতে থাকে। ডাইনোসর গোষ্ঠী আমাদের এই
পৃথিবী নামক গ্রহের প্রাগৈতিহাসিক অধিবাসী। পৃথিবীতে এরা প্রায় ১৬০
মিলিয়ন বছর ধরে রাজত্ব করেছে। এবং সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে আজকের আধুনিক
পাখিরা থেরোপোড ডাইনোসরদের সরাসরি বংশধর বলে ধারনা করা হয়। ডাইনোসর এই
নামটি এসেছে গ্রিক ভাষা থেকে যার অর্থ “ভয়ঙ্কর টিকটিকি” এবং ১৮৪২ সালে
ইংরেজ জীবাশ্মবিদ রিচার্ড ওয়েন ওদের অমন বিদঘুটে নামটি দেন।
ডাইনোসর শব্দটির সাথে কমবেশী আমরা সকলেই পরিচিত। এক সময়ের বর্তমান
পৃথিবীর ভয়ঙ্কর, বিশাল ও বিরাট আর শক্তিশালীএ জন্তুটি পৃথিবীতে বিচরণ
করেছিল প্রায় ১৬০ মিলিয়ন বা ১৬০০০০০০০ বছর যাবত, যাকিনা এককথায়
অবিশ্বাস্য। পৃথিবীতে ডাইনোসরের উদ্ভব হয় ২৩০ মিলিয়ন বছর পূর্বে আর ৬৫
মিলিয়ন বছর পূর্বে এর বেশীরভাগ প্রজাতির বিলুপ্তি ঘটে। আমরা বর্তমান সময়ে
যে সকল পাখি দেখতে পাই, তাদেরকে ডাইনাসোরেরই কিছু প্রজাতির বিবর্তিত রূপ
বলে বিজ্ঞানীরা ধারণা করেন।
ডাইনোসরের বিলুপ্তির পরিপূর্ণ ও সঠিক কারণ এখনো পুরোপুরিভাবে জানতে
পারেননি বিজ্ঞানীরা। তবে অনেক বিজ্ঞানীই ধারণা করছেন কোনো বড় আকারের
উল্কাপিন্ড অথবা কোন মহাকর্ষীয় কনা পৃথিবীর উপর প্রবলভাবে আঘাত হানার ফলে
ডাইনোসর এবং এদের সকল প্রজাতি বিলুপ্ত হয়। অনেক বিজ্ঞানীর মতে, উল্কাটির
দৈর্ঘ্য ছিল প্রায় পনের কিলোমিটার এবং এর আঘাত পারমাণবিক বোমার চেয়ে এক
বিলিয়ণ গুণ বেশী শক্তিশালী ছিল।
তবে কেউ কেউ মনে করেন,উল্কার আঘাতে নয় বরং আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুতপাতের
ফলে ডাইনোসরের প্রজাতির বিলুপ্তি ঘটে। তবে এই সকল কারণের স্বপক্ষে অথবা
বিপক্ষে কোন উল্লেখযোগ্য প্রমাণ কেও দেখাতে পারেনি। তাছাড়া অনেক বিজ্ঞানী
খাদ্যাভাবকেও একটি উল্লেখযোগ্য কারণ বলে ধারণা করেন। সেসময় মাংশাসী
ডাইনোসর তৃণভোজী ডাইনোসরদের খেয়ে ফেলত বিধায় এক সময় খাদ্যাভাব সংঘটিত
হয় বলে অনেক বিজ্ঞানীর ধারণা।
তাপমাত্রার পরিবর্তনকেও উল্লেখযোগ্য কারণ হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে,
কারণ তখন পৃথিবীব্যাপী তাপমাত্রা পরিবর্তন ঘটেছিল উল্লেখযোগ্যভাবে। একই কথা
বলেছেন অনেক বিজ্ঞানীয়ও তাদের অনেকের মতে সেসময় পৃথিবীব্যাপী তাপমাত্রার
এক ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে যার সাথে অভিযোজিত হতে না পেরে অনেক ডাইনোসর
প্রজাতি বিলুপ্ত হয়।
ডাইনোসরদের আকার ছিল বিশাল এই বিশালাকার ডাইনোসরেরা চলাফেরায় ধীর ও
স্থবিরতা এবং নোংরা পরিবেশের কারণে তারা বিভিন্ন ভাইরাস ও ব্যাক্টেরিয়া
ঘটিত রোগের শিকার হয় এবং এভাবে এক সময় বিলুপ্তির পথে ক্রমান্বয়ে অগ্রসর
হয়।
তবে ডাইনোসরের বিলুপ্তিতে আরেকটি কারণকে প্রাধান্য দেয়া হয় সেটি হলো,
তাদের ডিমের খোসার পুরুত্ব। বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করে দেখে যে, সাড়ে ছয়
কোটি বছর আগের ডিমের খোসা ১২ থেকে ১৪ কোটি বছর আগের ডিমের খোসার তুলনায়
যথেষ্ট পুরু ছিল। ফলে ডিমের খোসা ভেঙ্গে বেরিয়ে আসা বাচ্চা ডাইনোসরের
পক্ষে যথেষ্ট কষ্টসাধ্য ব্যাপার ছিল। এর ফলে পরবর্তীতে ডাইনোসরের
বিকলাঙ্গতা দেখা দিত এবং প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস পেত। এভাবে এক সময় তারা
বিকলাঙ্গতা একই সাথে প্রজনন ক্ষমতা হ্রাসের দরুন বিলুপ্তির দিকে অগ্রসর
হয়।
ডাইনোসরদের বিলুপ্তির কারণ
রিভিউ করছেন Unknown
তে
11:06 PM
রেটিং:
No comments: