Top Ad unit 728 × 90

>
[]

প্রাচীন পৃথিবীর জীববৈচিত্র্যের ট্রিয়াসিক যুগের ডাইনোসররা

জীবাশ্মবিদ্যার আধুনিকায়নের সাথে সাথে প্রাচীন পৃথিবীর জীববৈচিত্র্যের সাথে আমাদের যে পরিচয় ঘটেছে তা থেকে বলা যায়, ট্রিয়াসিক যুগের ডাইনোসররা ছিল অপেক্ষাকৃত ছোট আকৃতির এবং লাফিয়ে চলা কিছু সরীসৃপবিশেষ। এ যুগের শেষ সময়ের মধ্যেই সমগ্র পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছিল তারা এবং ক্রমাগত নতুন প্রজাতির ডাইনোসরের উদ্ভব ঘটেছিল। প্রতিটি প্রজাতিই আকৃতিগত দিক দিয়ে পূর্ববর্তীদের ছাপিয়ে গিয়েছিল এবং অর্জন করেছিল এমন বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য যা পৃথিবীতে আধিপত্য বিস্তারে তাদের সক্ষম করে তুলেছিল। তখনো পৃথিবীর মহাদেশগুলো পৃথক হয়ে যায়নি; চারপাশে পানিবেষ্টিত অবস্থায় স্থলভাগের বেশির ভাগ অঞ্চলেই তারা ছড়িয়ে পড়েছিল। তাই সমগ্র পৃথিবীতেই এখন আমরা খুঁজে পাচ্ছি তাদের জীবাশ্ম, এমনকি অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশেও। জীবাশ্মসম্পর্কিত জ্ঞান থেকে জানা যায়, ‘প্যানজিয়া’ নামক মহাদেশে (Super-Continent) বিচরণশীল ডায়নোসররা ট্রিয়াসিক যুগের শেষ দিকে পরসপর থেকে পৃথক হয়ে যায় এবং লরেনসিয়া ও গন্ডোয়ানা নামক দুটি পৃথক মহাদেশে বিসতৃতি লাভ করে। জুরাসিক ও ক্রিটেসিয়াস যুগে তাদের বিসতৃতির পরিমাণ এত বেড়ে গিয়েছিল যে তখনকার স্থলচর প্রাণীদের মধ্যে ১ মিটারের বেশি দৈর্ঘ্যের প্রতিটি প্রাণীই ছিল কোনো না কোনো প্রজাতির ডাইনোসর। big dinosaur wallpaper  300x240 প্রাচীন পৃথিবীর জীববৈচিত্র্যের ট্রিয়াসিক যুগের ডাইনোসররা
প্রথম পর্যায়ে মহাদেশীয় সঞ্চারণ মতবাদটি প্রতিষ্ঠা করা এতটা সহজ না হলেও আধুনিক সময়ে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে একই সময়ে অবস্থানকারী জীবকুলের জীবাশ্ম প্রাপ্তি এ বিষয়টিকে অর্থবহ করে তুলেছে। কারণ মহাদেশগুলো একত্র অবস্থায় থাকার ব্যাপারে তখন প্রত্যক্ষ প্রমাণ দেখানোর মতো সুবিধাজনক কোনো উপায় সহজলভ্য ছিল না। ষোড়শ শতাব্দীতে হল্যান্ডের ওরটেলিয়াসের আমেরিকা মহাদেশ সৃষ্টি সম্পর্কিত তত্ত্ব থেকেই এ বিতর্কের শুরু। তিনি বলেছিলেন, ‘আসলে ইউরোপ ও আফ্রিকা ভেঙেই তৈরি হয়েছে আমেরিকা।’ তারপর তার এ কথার তিন শতাব্দীরও বেশি সময় কেটে গেল। ওরটেলিয়াসের তত্ত্ব নিয়ে এবার এলেন জার্মান বিজ্ঞানী আলফ্রেড ওয়েগেনোর। তিনি এই তত্ত্বটিকে আবার সবার সামনে তুলে ধরলেন, তবে এবার একটু বিসতৃত পরিসরে এবং বেশ জোর গলায়। তিনি বললেন, ‘অনেককাল আগে পৃথিবীর সব মহাদেশ আসলে একসাথে ছিল।’ তিনি একে অভিহিত করলেন ‘প্যানজিয়া’ নামে; যার অর্থ দাঁড়ায় ‘সমগ্র পৃথিবী’।
Dinosaur Pictures 16 300x175 প্রাচীন পৃথিবীর জীববৈচিত্র্যের ট্রিয়াসিক যুগের ডাইনোসররা
তার মতে, প্রায় ২০০ মিলিয়ন বছর আগে এ মহাদেশটি ভাঙতে শুরু করে তারপর ক্রমাগত ভাঙতে ভাঙতেই তা আজকের এই অবস্থায় এসে পৌঁছেছে। তার এ তত্ত্বের যথার্থতা অবশ্য আজকাল আমাদের পাঠ্যপুস্তক খুললেও বুঝতে পারা যায়। বিভিন্ন মহাদেশে খুঁজে পাওয়া একই সময়ে অবস্থানকারী জীবকুলের জীবাশ্মগুলো দেখে তিনি এ ধারণা করেছিলেন। তাছাড়া একেকটি মহাদেশের ভাঙা অংশগুলোর সাথে অন্যান্য মহাদেশের ভাঙা অংশগুলোর খাপে খাপে মিলে যাওয়ার ব্যাপারটিও এ তত্ত্ব প্রতিষ্ঠা করতে বেশ সহায়ক হয়েছিল। শুধুই কি মহাদেশীয় সঞ্চারণ তত্ত্ব, ভূ-ত্বকের বিভিন্ন স্তরে খুঁজে পাওয়া ফসিলগুলো বিচার-বিশ্লেষণ করে আমরা বিভিন্ন যুগে পৃথিবীতে বিচরণশীল প্রাণী আর উদ্ভিদের তুলনামূলক চিত্র দেখতে পাই। শুধু ডাইনোসরই নয়, বিলুপ্তির খাতায় নাম লেখানো অনেক জীবনের জীবনপ্রণালীর প্রতিটি স্তরে প্রাপ্ত জীবাশ্ম রেকর্ড থেকে আমরা তাদের জীবনযাত্রার নিখুঁত বর্ণনা পেতে সক্ষম হয়েছি, যা প্রাচীন পৃথিবীর সাথে আমাদেও যোগসূত্র স্থাপন করিয়েছে এবং প্রাণ উৎপত্তির ধারাবাহিকতায় আমাদের অবস্থান সম্পর্কে জানতে বহুলাংশে সহায়তা করেছে। ফসিল রেকর্ড থেকে কেবল প্রাণের অস্তিত্বের ব্যাপারটিই নয়, আবহাওয়া, জলবায়ু আরো কত রকমের তথ্যই না পাওয়া সম্ভব। মহাদেশীয় সঞ্চারণ ও প্লেট টেকটোনিক্সের তত্ত্ব আবিষকারের পেছনেও ফসিল রেকর্ডগুলোই ছিল অকাট্য প্রমাণ।
images21 প্রাচীন পৃথিবীর জীববৈচিত্র্যের ট্রিয়াসিক যুগের ডাইনোসররা
গ্রিক শব্দ টেকটোনিক্সের অর্থ হচ্ছে ‘তৈরি করা’। অর্থাৎ প্লেট টেকটোনিক্স কথাটি থেকে বোঝা যায়, পৃথিবীর পৃষ্ঠদেশ বিভিন্ন প্লেট দিয়ে তৈরি। এই প্লেটগুলো অনবরত তাদের নিচের আরো ঘন এবং প্লাস্টিকের মতো স্তর অ্যাসথেনস্ফেয়ারের দিকে ক্রমাগত সরে যাচ্ছে। ভূপৃষ্ঠের মতো এমন একটা কঠিন আর বিশাল জিনিসের গতিময়তার আসল কারণটি হলো পৃথিবীর অভ্যন্তর ভাগে আটকে থাকা তাপ এবং এর ফলে সৃষ্ট ম্যাগমা। প্লেটগুলোর এ সঞ্চালনের ফলেই সৃষ্টি হয় পর্বতমালার কিংবা ধসে পড়ে কোনো মহাদেশ। ভূতাত্ত্বিক গবেষণায় এ তত্ত্বের গুরুত্ব অনেক। জীবাশ্ম রেকর্ডগুলোই শেষমেশ এ তত্ত্বকে প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছিল। জেনেটিক্স, জিনোমিক্স এবং অণুজীববিদ্যার  অগ্রগতির ফলে আজ আমরা এ প্রাণের অগ্রযাত্রার আর জীবকুলের জীবনাচার সম্পর্কে কথাগুলো বেশ স্বাচ্ছন্দ্যের সাথেই বলতে পারছি। আমরা আজ ডিএনএ সম্পর্কে জানতে পেরেছি; জিনের ব্যাপারটিও আজ আমাদের কাছে পরিষকার। অবশ্য সবকিছুর পেছনেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে বিভিন্ন সময়ের খুঁজে পাওয়া জীবাশ্ম; যা পৃথিবীর দীর্ঘ সময়ের প্রাণের অস্তিত্বের অকাট্য প্রমাণ, এই শ্যামল গ্রহে প্রাণের কোলাহলের নীরব পদচিহ্ন।
dinosaur 15 899x719 প্রাচীন পৃথিবীর জীববৈচিত্র্যের ট্রিয়াসিক যুগের ডাইনোসররা
আজ আমরা কোষীয় পর্যায়ে মিউটেশন নিয়ে চিন্তাভাবনা করছি। জীবদেহে সৃষ্ট পরিবর্তনের বিষয়ে এ প্রক্রিয়াটি একটি সরল ব্যাখ্যা প্রদান করে, যা বিভিন্ন সময়ে পাওয়া প্রাণী প্রজাতির উৎপত্তি তত্ত্বের যৌক্তিকতাকে বুঝতে অনেকাংশেই সহায়ক। আকস্মিক এবং বংশগত পরিবর্তনগুলোকেই বলা হয় মিউটেশন বা পরিব্যক্তি। কোনো জীবে হঠাৎ করেই নতুন ধরনের চরিত্র দেখা দিতে পাওয়ার ব্যাপারটি এ রকম পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে বুঝতে পারা যায় আর এ চরিত্র উত্তরাধিকার সূত্রে স্থানান্তরিত হয় বংশপরম্পরায়।
dainour প্রাচীন পৃথিবীর জীববৈচিত্র্যের ট্রিয়াসিক যুগের ডাইনোসররা
চার্লস ডারউইন এ ধরনের পরিবর্তন সম্পর্কে অবহিত ছিলেন। তবে জীবের এ ধরনের আকস্মিক পরিবর্তনের কথা প্রথম যিনি বলেছিলেন তিনি হলেন হুগো ডি ভ্রিস। তিনি এ পরিবর্তনগুলোর যথাযথ গুরুত্ব উপলব্ধি করতে পারায় এ সংক্রান্ত গবেষণার সূত্রপাত করেছিলেন। ১৯০১ সালে তিনি Oenothera Lamnarchkiann [evening primrose] নিয়ে গবেষণার মাধ্যমে মিউটেশন আবিষ্কার করেন।
প্রাচীন পৃথিবীর জীববৈচিত্র্যের ট্রিয়াসিক যুগের ডাইনোসররা রিভিউ করছেন Unknown তে 1:55 AM রেটিং:

No comments:

কপিরাইট ২০১৬ © টিপস ওয়ার্ল্ড এর সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
ডিজাইন করেছেন আব্দুল্লাহ আল মামুন

যোগাযোগ

Name

Email *

Message *

Theme images by enot-poloskun. Powered by Blogger.