Top Ad unit 728 × 90

>
[]

কান থেকে মাথার সমস্যা


যে সকল সাধারণ উপসর্গ নিয়ে তোমরা ছোটরা ডাক্তারের শরণাপন্ন হও, মাথাঘোরা তার মধ্যে একটি অন্যতম উপসর্গ। এই মাথা ঘোরা বিভিন্ন রকমের হতে পারে। শরীরের ভারসাম্যহীনতা, পড়ে ব্যথা পাওয়া, মুর্ছা যাবে বলে মনে হওয়া, মস্তিষ্কে শূন্যতা, মাথায় ঘুর্নীর মত হওয়া বা পারিপার্শ্বিক পৃথিবী ঘুরছে মনে হওয়া। ইংরেজিতে এগুলোকে উরুুরহবংং বলে। কেউ যখন বলে যে, সে নিজে ঘুরছে বা পারিপার্শ্বিক পৃথিবীটা ঘুরছে সেটাকে াবৎঃরমড় বলে। আর এই ধরনের মাথা ঘোরা সাধারণত কান তথা অন্তঃকর্ণের জন্যই হয়ে থাকে।
কান সম্পর্কে দুটি কথা
অন্তঃকর্ণের দুটি অংশ। সামনের অংশকে বলে ককলিয়া যা শ্রবণশক্তি নিয়ন্ত্রণ করে এবং পিছনের অংশকে বলে ভেস্টিবিউল যা মাথার ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণ করে। অন্তঃকর্ণের ঝিল্লির মধ্যে তরল পদার্থ ও অতি সূক্ষ্ম চুল সদৃশ সংবেদনশীল অঙ্গ থাকে যা মস্তিষ্কের নির্দিষ্ট স্থানে মাথার অবস্থান সম্পর্কে সঙ্কেত পাঠায়।
শরীর ও মাথার নিয়ন্ত্রণ
মস্তিষ্কের বিশেষ অংশ যেমন সেরিবেলাম, সেরিব্রাম, ব্রেইনস্টেম শরীর ও মাথার ভারসাম্যতা এবং অবস্থান নিয়ন্ত্রণ করে। চামড়া, মাংসপেশি, হাড় জোড়া ও চক্ষু শরীরের অবস্থান সম্পর্কে সঙ্কেত পাঠায় মস্তিষ্কের ঠিকানায়। এগুলোর কোনোটাতেই স্বাভাবিক কার্য প্রক্রিয়ার ব্যাঘাত ঘটলে বিভিন্ন তীব্রতায় মাথাঘোরা রোগ হয়ে থাকে।

উপসর্গ
মস্তিষ্ক, চামড়া, মাংসপেশি, হাড় জোড়া এবং চক্ষুর কোনো রোগ হলে শরীরের ভারসাম্যহীনতা, মস্তিষ্কে শূন্যতা, সংজ্ঞাহীনতা, হাল্কা ঘুর্নী হয়ে থাকে সঙ্গে বমি বমি ভাব, বমি, নিস্টেগামস হয়ে থাকতে পারে। অন্তঃকর্ণের কোনো রোগ হলে মূলত তীব্র ঘুর্নী হয়ে থাকে সঙ্গে বমি ভাব, বমি, নিস্টেগমাস, ভারসাম্যহীনতা ও শ্রবণ শক্তি কম হওয়া ইত্যাদি উপসর্গ থাকতে পারে।
কিছু অতি সাধারণ অন্তঃকর্ণের রোগ যা মাথা ঘোরা সৃষ্টি করে। বিনাইন প্যারঅক্সিস্মাল পজিশনাল ভাইটাইগো এটি একটি অতি সাধারণ উপসর্গ। হঠাৎ করে মাথা কোনো নির্দিষ্ট অবস্থানে নিলে মাথা ঘোরা শুরু হয়। সাধারণত শোবার সময় মাথা এদিক ওদিক করলে বা মাথা হেলিয়ে কে নো কাজ করলে এই জাতীয় মাথা ঘোরা শুরু হয়। বয়সজনিত কারণে, মাথায় আঘাত প্রাপ্ত হলে অন্তঃকর্ণের ঝিল্লির ভিতরের তরল পদার্থের কিছু পরিবর্তনে এই রোগ হয়। এই ধরনের াবৎঃরমড় বেশিক্ষণ স্থায়ী হয় না এবং ধীরে ধীরে সেরে যায়। তবে কিছু ক্ষেত্রে এর চিকিৎসা প্রয়োজন হয়।
মিনিয়ার্স ডিজিজ
এই রোগে হঠাৎ করে মাথা ঘোরা শুরু হয়, সাথে বমি ভাব, বমি, ভারসাম্যহীনতা, শ্রবণ শক্তি সাময়িক কমে যাওয়া, নিস্টেগমাস থাকতে পারে। এর স্থায়িত্ব হয় কয়েক সেকেন্ড থেকে কয়েক দিন। অন্তঃকর্ণের ঝিল্লির কারণেই এই রোগ হয়।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ওষুধের সাহায্যে চিকিৎসা করা হয়। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে অস্ত্রপচারের প্রয়োজন হতে পারে।
ভেস্টিবিউলার নিউরোনাইটিস
ভাইরাসজনিত কারণে এই রোগ হয়ে থাকে। নিকট অতীত অথবা বর্তমানে ফ্লু হয়ে থাকতে পারে। এই রোগের মাথা ঘোরার স্থায়িত্ব সাধারণত বেশি হয়ে থাকে। পূর্ণ বিশ্রাম সাথে কিছু ওষুধ এর একমাত্র চিকিৎসা।
ল্যাবিরিনাথাইটিস
অন্তঃকর্ণে ভাইরাস ব্যাকটেরিয়া জনিত প্রদাহ হলে এই রোগ হয়। কানে কম শুনতে পাওয়া, বমি বমি ভাব, চোখের অনিয়ন্ত্রিত চলাচল, ভারসাম্যহীন থাকা স্বাভাবিক। অনেক সময় ল্যাবিরিনাথাইটিস-এর আশে পাশে কোনো প্রদাহ হলে মাথা ঘোরা হয়ে থাকে। একে সেরাস ল্যাবিরিনথাইটিস বলে।
একুইস্টিক নিউরোমা
কানের ভেতরের সুড়ঙ্গ পথে ক্যানাল বা সিপি এ্যানজেলে এ ধরনের টিউমার হতে পারে। তবে এতে শুধু একদিকের শ্রবণ শক্তি কমে যায়। কেবলমাত্র অস্ত্রপচারের সাহায্যে এর  চিকিৎসা করা হয়ে থাকে।
অন্যান্য কারণ
কানের আরো কিছু সাধারণ কারণে মাথা ঘোরা রোগ হয়। যেমন মধ্যকর্ণে প্রদাহ, ইউস্টাশিয়ান টিউবের বন্ধ থাকা বা প্লেনে ভ্রমণে বেরো ট্রমা হওয়া, কানে শক্ত খৈল কানের পর্দায় চাপ প্রয়োগ করলে মাথা ঘোরা রোগ হতে পারে।
কান ছাড়া অন্য যে সব কারণে মাথা ঘোরা রোগ হতে পারে
১. মস্তিষ্কের বিশেষ জায়গায় রক্তের সঞ্চালন কম হওয়া, রক্তক্ষরণ হওয়া, মস্তিষ্কের টিউমার কিংবা মাল্টিপাল স্ক্রোরোসিস হলে
২. রক্ত স্বল্পতা, রক্তচাপ হঠাৎ কমে গেলে
৩. উপর থেকে নিচে তাকালে
৪. মাইগ্রেন হলে
শেষ কথা
মাথা ঘোরা রোগ অনেক কারণেই হতে পারে। এর জন্য পরিপূর্ণ পরীক্ষা নিরীক্ষা করার প্রয়োজন, বিশেষ করে তীব্র ঘুর্নী বা াবৎঃরমড় হলে অবশ্যই কোনো নাক, কান ও গলা বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত।
বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ সেবন করা ঠিক হবে না। এতে লাভের চেয়ে ক্ষতি হবার আশঙ্কা থেকে যায়।
কান থেকে মাথার সমস্যা রিভিউ করছেন Unknown তে 8:24 AM রেটিং:

No comments:

কপিরাইট ২০১৬ © টিপস ওয়ার্ল্ড এর সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
ডিজাইন করেছেন আব্দুল্লাহ আল মামুন

যোগাযোগ

Name

Email *

Message *

Theme images by enot-poloskun. Powered by Blogger.